Ecosprin 75 এর কাজ কি? খাওয়ার নিয়ম, উপকারিতা এবং সতর্কতা
ইকোস্প্রিন ৭৫ (Ecosprin 75) একটি বহুল ব্যবহৃত ঔষধ, যা প্রধানত হৃদরোগ এবং রক্ত সঞ্চালনজনিত সমস্যার প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়। এটি অ্যাসপিরিনের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা (৭৫ মি.গ্রা.) ধারণ করে, যা রক্তের প্লেটলেটের জমাট বাঁধা রোধ করে এবং রক্ত সঞ্চালনকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
ইকোস্প্রিন ৭৫ এর কাজ কি?
ইকোস্প্রিন ৭৫ রক্তের প্লেটলেটের একত্রিত হওয়া কমিয়ে দেয়, ফলে ধমনীর মধ্যে থ্রম্বাস (রক্ত জমাট) গঠনের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। এটি মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (হার্ট অ্যাটাক), স্ট্রোক এবং অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
ইকোস্প্রিন ৭৫ mg এর ব্যবহার
ইকোস্প্রিন ৭৫ mg নিম্নলিখিত অবস্থায় ব্যবহৃত হয়:
ধমনীর প্রতিবন্ধকতার প্রতিষেধক: হার্ট অ্যাটাক, পুনরায় হার্ট অ্যাটাক, বাইপাস সার্জারি, একিউট ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং ট্রানজিয়েন্ট ইস্কেমিক অ্যাটাক (TIA) এর ক্ষেত্রে।
মৃদু থেকে মাঝারি ব্যথা: মাথাব্যথা, মাংসপেশীর ব্যথা, ঋতুকষ্ট এবং দাঁতের ব্যথা উপশমে।
প্রদাহজনিত দীর্ঘস্থায়ী রোগ: অস্থিসন্ধির বাতজনিত ব্যথা এবং প্রদাহের চিকিৎসায়।
জ্বর উপশম: সাধারণ সর্দি-জ্বর এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অবস্থায়।
ইকোস্প্রিন ৭৫ খাওয়ার নিয়ম
ইকোস্প্রিন ৭৫ খাওয়ার নিয়ম নির্ভর করে রোগীর অবস্থা এবং চিকিৎসকের পরামর্শের উপর। সাধারণত:
ধমনীর প্রতিবন্ধকতা প্রতিরোধে: প্রতিদিন ৭৫ মি.গ্রা. একটি ট্যাবলেট।
ব্যথা ও জ্বরে: ৩০০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট ১-৩টি প্রতি ৬ ঘন্টা পর পর, দিনে সর্বোচ্চ ৪ গ্রাম পর্যন্ত।
সঠিক মাত্রা এবং সময়সূচী নির্ধারণে অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।
ইকোস্প্রিন ৭৫ কখন খেতে হয়?
ইকোস্প্রিন ৭৫ সাধারণত প্রতিদিন একই সময়ে খাওয়া উচিত, যাতে রক্তে ঔষধের স্থিতিশীল মাত্রা বজায় থাকে। খাবারের সাথে বা পরে এটি গ্রহণ করা যেতে পারে, যাতে পেটের অস্বস্তি কম হয়। তবে, সুনির্দিষ্ট সময়সূচী এবং মাত্রা নির্ধারণে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা আবশ্যক।
ইকোস্প্রিন ৭৫ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ইকোস্প্রিন ৭৫ ব্যবহারের ফলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যেমন:
বমি বমি ভাব
বদহজম
পরিপাকতন্ত্রের ঝিল্লির প্রদাহ বা ক্ষত
ফুসফুসের খিঁচুনি
যদি উপরের কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ইকোস্প্রিন ৭৫ ব্যবহারে সতর্কতা
নিম্নলিখিত অবস্থায় ইকোস্প্রিন ৭৫ ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:
হাঁপানি: অ্যাসপিরিন ব্রোঙ্কোস্পাজম সৃষ্টি করতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে।
গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকাল: বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষ ৩ মাসে অ্যাসপিরিন ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এটি গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি করতে পারে এবং প্রসবের সময় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, অ্যাসপিরিন মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয়, তাই স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।
নাকের পলিপ এবং এলার্জি রোগীরা: এদের ক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন ব্যবহারে সতর্কতা প্রয়োজন।
ইকোস্প্রিন ৭৫ এর প্রতিনির্দেশনা
নিম্নলিখিত অবস্থায় ইকোস্প্রিন ৭৫ ব্যবহার করা উচিত নয়:
১২ বছরের নিচে বাচ্চারা: রেইজ সিনড্রোমের ঝুঁকি।
দুগ্ধদানকারীরা: মাতৃদুগ্ধে অ্যাসপিরিনের নিঃসরণ।
সক্রিয় পেপটিক আলসার: পেটের আলসার।
হিমোফিলিয়া, ইন্ট্রাক্রেনিয়াল হেমোরেজ এবং অন্যান্য রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা।